প্রতিষ্ঠার ৩৬ বছর পর ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে শেয়ারবাজারে আসছে নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস। এ জন্য বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ৭৫ কোটি টাকা নেবে কোম্পানিটি।
এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে বিডিং শুরু হয়ে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিডিংয়ের শেষ দিন। আইপিওতে কোম্পানিটির শেয়ার পেতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিডিংয়ে অংশ নিতে পারবেন যোগ্য বিনিয়োগকারীরা।
সারাদেশে ৪৮৬টি মানবদেহের ও ভেটেরিনারি ৪৮টি পণ্য বাজারজাত করা এ কোম্পানিটির সেফেলোস্পেরিন ইউনিটের সংস্কার, উৎপাদন ভবন নির্মাণে নতুন ইউটিলিটি ও ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন নিমার্ণের জন্য শেয়ারবাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করছে।
এ লক্ষ্যে গত ৪ জুলাই কাট-অফ প্রাইস নির্ধারণে নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালসের বিডিং শুরু হয়েছে। ওই দিন বিকেল ৫টায় শুরু হওয়া এই বিডিং আজ বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) বিকেল ৫টা পর্যন্ত চালু থাকবে।
নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড নিজস্ব জমিতে ওষুধ উৎপাদনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করে ১৯৮৬ সালে। ১৯৮৮ সালে সাধারণ উৎপাদন ইউনিট চালু করে কোম্পানিটি। ২০০৩ সালে ভেটেরিনারি প্রোডাকশন ইউনিট শুরু হয়। ২০০৯ সালে সেফালোস্পোরিন ইউনিট শুরু করা হয়, যা একটি উচ্চমানের সেফালোস্পেরিন সুবিধা নিশ্চিত করে এবং ২০১২ সালে এসভিপিও ইউনিট শুরু করা হয়। আর ২০১৩ সালে পেনিসিলিন ইউনিটের নতুন সুবিধা শুরু করা হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে চার হাজারের বেশি জনবল রয়েছে।
নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস থেকে সারাদেশে ৪৮৬টি হিউম্যান (মানবদেহের) ও ভেটেরিনারি ৪৮টি পণ্য বাজারজাত করা হচ্ছে। এ জন্য সারাদেশে অবস্থিত ২১টি বিক্রয় ডিপোর মাধ্যমে অর্ডার পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্যামিস্টশপে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। এ কোম্পানিটির ওটিসি বাজারে প্রতিবছর অবস্থান বাড়ছে। নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের বেশিরভাগ বিক্রয় গ্রামীণ, টায়ার-২ এবং টায়ার-৩ শহরে কেন্দ্রীভূত হয়। যেখানে দেশের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ বসবাস করে।
শেয়ারবাজারে আসতে যাওয়া নাভানা ফার্মা ফোরপি এবং এমএসপি জরিপ অনুসারে প্রেসক্রিপশন বিবেচনায় ১৫তম বৃহতম কোম্পানি এবং ২০২২ সালে আইএমএসের কিউ-১ জরিপে বাজার অবস্থান, বাজার শেয়ার ও বিক্রয় বৃদ্ধির হারের বিবেচনায় কোম্পানিটি বাংলাদেশে ২৬তম অবস্থানে রয়েছে। আইএমএস রিপোর্ট কিউ-১ অনুযায়ী, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের অনেকগুলো ওষুধ মোলিকুলের বাজারে শীর্ষ অবস্থান বজায় রেখেছে।
শেয়ারবাজারে আসতে যাওয়া এ কোম্পানিটি ২০২১-২২ অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই ২১-মার্চ ২২) শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৩৯ পয়সা। আর বিগত পাঁচটি আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী ভারিত গড়হারে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে দুই টাকা ৫২ পয়সা। চলতি বছরের ৩০ মার্চ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পত্তি মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে (পুনঃমূল্যায়নসহ) ৪৩ টাকা ৫৩ পয়সা। আর পুনঃমূল্যায়ন ছাড়া এই সম্পদের পরিমাণ ১৯ টাকা ২ পয়সা।
নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালসের কাট-অফ প্রাইস থেকে ৩০ শতাংশ ডিসকাউন্টে আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার ইস্যু করা হবে। এছাড়া ফেয়ার ভ্যালু থেকে ২০ শতাংশ ওপরে কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে ১৫ শতাংশ শেয়ার ইস্যু করবে। যা দুই বছর লক-ইন থাকবে।
কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে রয়েছে এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল ও ইবিএল ইনভেস্টমেন্টস। কোম্পানিটি গত ৮ জুন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন পায়।