একদিকে নাড়ির টানে গ্রামের বাড়ি ফেরার ধুম, অন্যদিকে কোরবানির পশু কিনতে ব্যস্ত মানুষ। ফলে দুয়ারে ঈদ কড়া নাড়লেও ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে শপিংমলগুলোতে। ক্রেতা না থাকায় দিনের অধিকাংশ সময় অলস কাটাচ্ছেন পোশাক বিক্রেতারা।
শুক্রবার (৮ জলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যমুনা ফিউচার, খিলগাঁও তালতলা সিটি করপোরেশন মার্কেট, রাজধানী সুপার মার্কেট, ফরচুন শপিংমল, মৌচাক মার্কেট, পলওয়েল সুপার মার্কেটসহ রাজধানীর বিভিন্ন শপিংমলে ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
ঈদের দুদিন আগে পোশাকের দোকানে ক্রেতা সংকট থাকলেও তাকে স্বাভাবিক বলছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, নতুন পোশাক বেশি বিক্রি হয় রোজার ঈদ কেন্দ্রিক। এছাড়া পহেলা বৈশাখ ও পূজায় বিক্রি ভালো হয়। কোরবানির ঈদে নতুন পোশাক তেমন বিক্রি হয় না।
তারা বলেন, কোরবানির ঈদের আগে সবাই পশু কেনার জন্য ব্যস্ত থাকেন। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এখন সবাই কোরবানির পশুর খোঁজে রয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে পোশাকের দোকানে মানুষের ভিড় খুব একটা থাকবে না এটাই স্বাভাবিক।
সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর অভিজাত শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্কে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ দোকানে কোনো ক্রেতা নেই। কিছু প্রতিষ্ঠানে হাতে গোনা কয়েকজন ক্রেতা-দর্শনার্থী দেখা যায়।
মার্কেটটিতে থ্রি-পিস কিনতে আসা কেয়া ইসলাম নামে একজন ক্রেতা বলেন, ভাইয়া ও আব্বু কোরবানির গরু কিনতে গেছেন। এবার ঈদ উপলক্ষে আমার কোনো থ্রি-পিস কেনা হয়নি। তাই আজ মার্কেটে আসলাম। দুটি থ্রি-পিস কেনার ইচ্ছা আছে।
মার্কেটটিতে ছেলেদের পোশাক বিক্রি করে এমন একটি প্রতিষ্ঠান রকিস। এ প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার মো. আরমান বলেন, এবার রোজার ঈদে ভালো ব্যবসা হয়েছে। কোরবানির ঈদে নতুন পোশাক খুব একটা বিক্রি হয় না। এখন সবাই কোরবানির পশু নিয়ে ব্যস্ত।
যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে তালতলা সিটি করপোরেশন মার্কেট গিয়েও ক্রেতা-দর্শনার্থীদের তেমন দেখা মেলেনি। মার্কেটটির ব্যবসায়ী মো. ফয়েজ বলেন, ঈদ কেন্দ্রিক আমাদের কোনো বিক্রি নেই। মাঝে মধ্যে দুই একজন এসে ঘুরে যাচ্ছেন। তবে বিক্রি তেমন হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, কোরবানির ঈদে পোশাক বিক্রি এমনিতেই কম হয়। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় বিক্রি অনেক কম হচ্ছে। বৈশ্বিক কারণে বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। ফলে সবাই এখন খরচ কম করার চেষ্টা করছে। তাছাড়া কোরবানি নিয়েও অনেকে ব্যস্ত। সবকিছু মিলেই আমাদের বিক্রি একেবারেই নেই।
ঈদ কেন্দ্রিক বিক্রি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন রাজধানী সুপার মার্কেটর ব্যবসায়ী মো. লিটন মিয়াও। তিনি বলেন, এক মাস ধরে একেবারেই বিক্রি নেই। সকাল থেকে এ পর্যন্ত (দুপুর সাড়ে ১২টা) মাত্র একটা থ্রি-পিস বিক্রি হয়েছে।
দুপুর আড়াইটার দিকে মৌচাক মার্কেট গিয়েও ক্রেতাদের তেমন দেখা মেলেনি। একটি দোকানে দুজনকে এক সঙ্গে বসে দুপুরের ভাত খেতে দেখা যায়। আর একটি দোকানে একজনকে মোবাইলে গান শুনতে দেখা যায়।
ঈদ কেন্দ্রিক বিক্রি পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে মার্কেটটির ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, ভাই এখন যেমন দেখছেন গত এক মাস ধরেই এ অবস্থা। ঈদ কেন্দ্রিক আমাদের বিক্রি একেবারেই নেই। তবে আজ যেহেতু ঈদের আগে শেষ শুক্রবার। তাই আশা করছি সন্ধ্যার পর কিছু ক্রেতা আসবে।