ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন চিরচেনা যানজটের শহর ঢাকা এখন অনেকটাই ফাঁকা। ঢাকার ব্যস্তময় সড়ক যেন সুনসান। ঈদের ছুটিতে রাজধানী ছেড়েছেন অসংখ্য মানুষ। মহল্লা, মার্কেট, সড়ক সবখানেই কমেছে কোলাহল। এ যেন এক অন্যরকম শহর। ঈদ আনন্দে ব্যস্ত নগরী এখন ফাঁকা। সড়কে নেই যানবাহনের চাপ। কমেছে কোলাহল, নাগরিক ব্যস্ততা। মাঝে মধ্যে দু-একটা গাড়ির দেখা মিলছে।
সোমবার (১১ জুলাই) রাজধানীর মিরপুর, আগারগাঁও, ফার্মগেট, তেজগাঁও, আসাদগেট, সংসদ এলাকা ও ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। তবে দূরপাল্লার বাসস্ট্যান্ডগুলোতে কিছুটা যানজট লক্ষ্য করা গেছে।
এসব এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, যানজটের ব্যস্ত শহর ঢাকায় এক ধরনের নীরবতা তৈরি হয়েছে। সড়কে খুবই অল্প সংখ্যক ব্যক্তিগত গাড়ি, গণপরিবহন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশাসহ নানা ধরনের পরিবহন চলাচল করছে। ঢাকার প্রধান সড়কগুলোতে যানজট না থাকায় দ্রুত গতিতে এসব পরিবহন চলাচল করতে দেখা গেছে।
ঢাকার মিরপুরের স্থায়ীভাবে বসবাস করেন রবিন। রোববার (১০ জুলাই) পশু কোরবানি দিলেও সোমবার আত্মীয়ের বাসায় কোরবানির পশুর মাংস দেওয়ার জন্য ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বের হয়েছেন। তিনি জাগো নিউজকে জানান, সকাল ১০টায় আত্মীয়দের বাসায় কোরবানির মাংস দিতে প্রাইভেটকার নিয়ে বেরিয়েছিলাম। ১৫ মিনিটের মধ্যে সেগুনবাগিচায় আত্মীয়ের বাসায় পৌঁছেছি। সেখান থেকে পার্শ্ববর্তী আরও কয়েকজন আত্মীয়ের বাসা ঘুরে ১২টার মধ্যে বাসায় পৌঁছাতে পেরেছি।
তিনি বলেন, ঈদে শহরের অধিকাংশ মানুষ বাড়ি যাওয়ায় রাজধানীতে যানজট নেই। সে কারণে দ্রুতগতিতে গাড়ি চলাচল করা সম্ভব হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি শুধু ঈদের একদিন আগে অথবা ঈদের তিন-চার দিন পর পর্যন্ত থাকে।
মিরপুর বাঙলা কলেজের সামনে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট অনিরুদ্ধ জাগো নিউজকে বলেন, ঈদের আগের দিন থেকে সড়কে যানবাহন চলাচলের চাপ কমেছে। এমন পরিস্থিতি আরও তিন থেকে চারদিন দেখা যাবে। এরপর আবারও আগের মতো যানজট ও ব্যস্ততা তৈরি হবে।
তিনি বলেন, রাস্তায় যান চলাচল কম থাকলে গাড়ি খুব দ্রুত গতিতে চলাচল করে। এ সময় অনেক কমবয়সী ছেলেদের দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার চালাতে দেখা যায়। সে কারণে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। তবে এবার ঈদে মিরপুরে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
ঢাকার অধিকাংশ সড়ক ফাঁকা থাকলেও গাবতলী ও মহাখালী বাসটার্মিনালে কিছুটা যানজট দেখা গেছে। ঈদের আগে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার চাপ থাকায় অনেকে সুবিধামতো টিকিট পাননি বলে ঢাকায় রয়ে গেছেন। চাপ কম থাকায় তারা এখন ঢাকা ছাড়ছেন। এছাড়া কোরবানির সময় যেসব মৌসুমি কসাই ঢাকায় এসেছিলেন কাজ শেষে তারাও ঢাকা ছাড়ছেন। এসব কারণে দূরপাল্লার বাস টার্মিনালগুলোতে যাত্রী ও পরিবহনের চাপ দেখে গেছে।