ডিমের বাজারে অস্থিরতার কারণ খুঁজতে ভোক্তা অধিকারের শুনানিতে এসে আবারও দাম বাড়ার আশঙ্কার কথা জানালেন উৎপাদকনকারীরা। এ ছাড়া অভিযানের কারণে আতঙ্ক তৈরি হওয়ায় বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কাও তাদের। কারসাজিতে জড়িতদের খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতিতেই শেষ হয়েছে অধিদফরের শুনানি।
বুধবার (২৪ আগস্ট) অধিদফতরের সভাকক্ষে ডিমের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে উৎপাদনকারী ফার্ম ও করপোরেট প্রতিষ্ঠান, এজেন্ট, ডিলার ও ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় সভার শুরুতেই ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ফয়সাল প্রতি পিচ ডিমের দাম বাড়িয়েদেয়। এটি কি সে নিজে থেকে করেছে নাকি তাকে দিয়ে করানো হয়েছে? এর জন্য আমরা ফয়সালকে আসতে বলেছিলাম, কিন্তু তিনি নাকি অসুস্থ, তিনি তাই আসেননি। তাহলে কিন্তু পর্দার আড়ালে কাজ চলছে।
তিনি আসেননি নাকি তাকে আসতে দেয়া হয়নি, ডিমের বাজার কারসাজির কারিগর হিসেবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কাছে চিহ্নিত ফয়সাল- সংস্থাটির পূর্বনির্ধারিত শুনানিতে না আসায় এমন সন্দেহ নিয়েই শুরু হয় বৈঠক।
বৈঠকে ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে দাবি করা হয়, কারসাজি করে সম্প্রতি ডিমের দাম বাড়ানো হয়নি। বেড়েছিল সরবরাহ ঘাটতির কারণে। এবিষয়ে যুক্তিও তুলে ধরা হয়।
ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি কাজী জাহিন হাসান বলেন, আপনারা যে বলছেন আমাদের দাম নির্ধারণের কারণে দাম বেড়েছিল। তারপর আপানাদের অভিযানের জন্য দাম আবার কমে গেল। কিন্তু তা তো ঠিক না। সরবরাহ ব্যাঘাত হওয়ায় দাম বেড়েছিল। তা ঠিক হওয়ার পর দাম কমে গেছে।
এ সময় কাজী ফার্মস দাবি করে, অভিযানে গিয়ে ব্যবসায়িক অনেক গোপন নথিও ফাঁস করে দেয়া হচ্ছে; যা ডিম উৎপাদনকারীদের আতঙ্কে ফেলে দিয়েছে।
কাজী ফার্মস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহেদুল হাসান বলেন, ব্যবসার গোপন নথিগুলো সারা বাংলাদেশে ফাঁস করা হলো। আমরা এখন স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি না।
এ সময় পোল্ট্রি শিল্পের কাঁচামালের দাম বাড়তে থাকায় ডিমের দাম প্রতি পিসে ৫০ পয়সা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানান বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের সভাপতি মশিউর রহমান।
শুনানি শেষ হলেও ডিমের দাম বাড়ার জন্য দায়ী ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে শনাক্ত করতে আরও সময় লাগবে বলে জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক।
ডিম নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, এর পেছনে কে বা কারা আছেন, সেটি খুঁজে বের করতে হবে। এ কালো হাত যেন আর কখনো না বাড়তে পারে, সেই ব্যবস্থাও নেব।
শুনানিতে পাইকারি ব্যবসায়ীরাও দাবি করেন, বড় ব্যবসায়ীরা ডিমের দাম বাড়ায়নি।