পাবনার বেড়া থেকে রাজশাহীগামী ঢালারচর এক্সপ্রেস ট্রেনের বগি সংকটে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। সিট না পেয়ে যাত্রীরা দাঁড়িয়ে যাতায়াত করছেন। নারী ও শিশুরা বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এ ট্রেনের একমাত্র শোভন চেয়ারের বগিটি মেরামতের জন্য মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) নীলফামারীর সৈয়দপুর কারখানায় পাঠানো হয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা না করে বগিটি মেরামতের জন্য পাঠানোর ফলে এ দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
হঠাৎ ট্রেনের একটি বগি কমে যাওয়ায় যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়ার পাশাপাশি ট্রেনের টিকেট পরিদর্শককে (টিটিই) বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। প্রতিটি বগিতে ধারণক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণ যাত্রী যাতায়াত করছে। অতিরিক্ত ভীড়ের কারণে টিটিইরা প্রতিটি যাত্রীর টিকিট পরিদর্শন (চেক) করতে পারছেন না।
জানা যায়, ৬টি বগি নিয়ে রাজশাহী থেকে ঢালারচর রুটে ট্রেনটি চলাচল করে। এ ট্রেনে ৫৩০টি আসন রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে এ ট্রেনে প্রায় ৮০০ যাত্রী যাতায়াত করেন। প্রতিটি বগিতে দাঁড়িয়ে যাত্রীরা চলাচল করে। এরমধ্যে ‘খ’ বগিতে ছিল ৯৮টি শোভন চেয়ার। বিকল্প ব্যবস্থা না করে শোভন চেয়ারের বগিটি মেরামতের জন্য কারখানায় পাঠানো হয়। এতে ট্রেনের যাত্রীদের দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়।
বুধবার (২০ জুলাই) ঢালারচর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী আহম্মেদ আলী বলেন, পাবনা থেকে এ ট্রেনে পর্যাপ্ত যাত্রী ওঠে। সব বগিতেই যাত্রী ভরপুর। পাবনাবাসীর দাবি ছিল এই ট্রেনের বগি বাড়ানোর, উল্টো বগি কমিয়ে দুর্ভোগের সৃষ্টি করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন টিকিট পরিদর্শক (টিটিই) বলেন, প্রতিনিয়ত ট্রেনের যাত্রীদের মুখোমুখি হতে হয় টিটিইদের। যাত্রীদের নানা অভিযোগ ও সমস্যা টিটিইদের দেখতে হয়। টিকিট সংগ্রহকারী যাত্রীরা ট্রেনে বসে যেতে না পারলে তারা বিরক্ত হন। তারা এ নিয়ে নানা কটূ কথাও বলেন। ঢালারচর এক্সপ্রেসে বগি সংকটের কারণে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ রুটের যাত্রীরা সবাই টিকিট কেটে যাতায়াত করেন। বিনা টিকিটের যাত্রী এ রুটে নেই বললেই চলে।
পাকশী বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ ও ওয়াগন) মো. মুনতাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বগিটি মেরামতের সময় হয়ে যাওয়ায় এটি সৈয়দপুর কারখানায় পাঠানো হয়েছে। বিকল্প আর কোনো শোভন চেয়ারের কোচ (বগি) না থাকায় নতুন বগি সংযুক্ত করা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, এটি পুরাতন বগি। স্বাভাবিকভাবে একটি বগি মেরামতে এক থেকে দেড় মাস সময় প্রয়োজন হয়। এ বগির ক্ষেত্রে সময় আরো বেশি লাগতে পারে। এই ট্রেনে বগি সংকটের বিষয়টি আমাদের জানা রয়েছে। তাই যতদ্রুত সম্ভব এটি মেরামত করে ট্রেনে সংযুক্ত করা হবে।
পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, বগি (কোচ) মেরামত জরুরি হওয়ায় এটি সৈয়দপুর কারখানায় পাঠানো হয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় নতুন বগি সংযুক্ত করা সম্ভব হয়নি।