রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ চান ৫৫ বছর বয়সী গাজীপুরের বেলায়েত শেখ। এক সুযোগ ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও চান তিনি।
সোমবার (২২ আগস্ট) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় শিফটে অংশ নেন বেলায়েত শেখ। পরীক্ষায় অনেক প্রশ্ন কমন না পড়ায় পরীক্ষা খারাপ হয়েছে বলে তিনি জাগো নিউজকে জানান। এ সময় তিনি রাবি, ঢাবি ও চবিতে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ইচ্ছার কথা জানান।
বেলায়েত শেখ জাগো নিউজকে বলেন, আমার ভাগ্য খারাপ, তাই প্রথমবার কোথাও চান্স পাচ্ছি না। প্রথমবার ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে ব্যর্থ হবেন না বলে তিনি আশাবাদী।
তিনি বলেন, এ বছর রাবিতে দ্বিতীয়বার পরীক্ষার সুযোগ থাকলেও আগামী বছর থাকবে কিনা জানি না। তবে রাবি প্রশাসনের কাছে সেকেন্ড টাইম চালু রাখার দাবি করছি। এছাড়াও ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও সেকেন্ড টাইম ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ চান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ঢাবি-চবিতে সেকেন্ড টাইমের দাবি নিয়ে কাজ করা কিছু শিক্ষার্থী আমাকে ফোন দিয়েছিল। তারা একটি মানববন্ধন করতে চায়। সেখানে আমাকে উপস্থিত থাকার জন্য বলেছে। তবে এই বয়সে মানববন্ধনে দাঁড়ানোটা কেমন দেখায়। সেজন্য আমি মানববন্ধনে থাকতে রাজি হইনি। তবে শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছি।
বেলায়েত আরও জানান, আমি চাই সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইম চালু হোক। কেননা প্রথমবার নানা কারণে অনেকে ভালো করতে পারে না। তাই বলে কি একজনের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে? উন্নত বিশ্বের প্রায় সব দেশে একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া যায়। তাহলে আমরা কেন পাব না?
১৯৬৮ সালে জন্ম নেওয়া বেলায়েতের ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী ছিলেন। প্রবল আগ্রহ থাকলেও দারিদ্র্যের কারণে কূল পেয়ে ওঠেননি তিনি। ১৯৮৩ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন বেলায়েত। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিতে হয় তাকে। ২০১৭ সালে ৫০ বছর বয়সে ভর্তি হন নবম শ্রেণিতে।
এ বছর বেলায়েত ঢাকা মহানগর কারিগরি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে (এইচএসসি-ভোকেশনাল) জিপিএ ৪.৫৮
নিয়ে পাস করেন। এর আগে ২০১৯ সালে বাসাবোর দারুল ইসলাম আলিম মাদরাসা থেকে জিপিএ ৪.৪৩ পেয়ে মাধ্যমিক সমমান দাখিল (ভোকেশনাল) পাস করেন।
এদিকে ঢাবি, রাবি ও জাবিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে চান্স পাননি তিনি। শেষ ভরসা ছিলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, এখন তাতেও আশাবাদী নন তিনি।