বগুড়ার ধুনটে চাহিদা অনুযায়ী ইউরিয়া সার না পেয়ে গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকরা। এতে সড়কে সবধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।
বুধবার (১৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ধুনট শহরের হাসপাতাল সড়কের বিসিআইসি অনুমোদিত মেসার্স এশিয়া এন্টারপ্রাইজ নামে সারের গুদামের সামনে এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন কৃষকরা।
সংবাদ পেয়ে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে কৃষকদের মাঝে সার বিক্রি শুরু হয়।
কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেসার্স এশিয়া এন্টারপ্রাইজ সরকার অনুমোদিত ধুনট ইউনিয়নের বিসিআইসি সার ডিলার। ওই ডিলারের গুদামে সার নিতে এসে জানতে পারেন তাদের চাহিদা অনুযায়ী সার দেওয়া হবে না। প্রত্যেক কৃষককে ৫-১০ কেজি করে ইউরিয়া সার দেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে রাখেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ধুনট উপজেলায় আগস্ট মাসের জন্য ৮৯০ মেট্রিক টন ইউরিয়া বরাদ্দ রয়েছে। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় একজন করে ডিলার রয়েছেন। বরাদ্দ পাওয়া সার ডিলারদের মাঝে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।
কৃষি অফিসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার সকাল থেকে ধুনট ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষকদের মাঝে জমির পরিমাণ অনুযায়ী দুজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ইউরিয়া সার বিক্রি করার কথা ছিল। কিন্তু সার বিক্রি শুরু করার আগেই কৃষকরা ক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করেন।
এ বিষয়ে মেসার্স এশিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শামীম সরকার বলেন, ‘কৃষকরা কী পরিমাণ সার পাবেন সে বিষয়ে ডিলারদের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা যেভাবে সার দিতে বলেন সেভাবেই দেওয়া হয়।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জান বলেন, ধুনট ইউনিয়নের ডিলার পয়েন্ট থেকে ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষকদের কাছে সার বিক্রি করার সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু ইউনিয়নের সব ওয়ার্ড থেকে কৃষক আসার কারণে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা জানান, বিক্ষুব্ধ কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। রাস্তা থেকে প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, কৃষকরা আজ সার পাবেন না জেনে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরে তাদের শান্ত করে সার বিক্রি শুরু করা হয়েছে। ডিলারদের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে সব ওয়ার্ডের কৃষকদের কাছে সার বিক্রি করা হবে।