বগুড়ায় ফুটবল খেলতে নামবে রোবট। শনিবার (৬ আগস্ট) জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি (নেকটার) বগুড়া মিলনায়তনে রোবটিকস অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতায় এই খেলা অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে সামনে রেখে এর সুফল ভোগ করার ক্ষেত্রে মানবসম্পদের বিকল্প হিসেবে ইন্টারনেট অব থিংকস এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারের ওপর চারটি ক্যাটাগরিতে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।
ক্যাটাগরির মধ্যে রয়েছে রোবো সুকার, লাইন ফলোইং রোবোটিকস কম্পিটিশন, প্রজেক্ট শোকেজিং এবং পোস্টার প্রেজেন্টেশন।
প্রতিযোগিতায় ১০৬টি টিমে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশসহ ৪৯টি প্রতিষ্ঠানের মোট ৩৩১ জন প্রতিযোগী অংশ নেবেন।
জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি (নেকটার) বগুড়া প্রথমবারের মতো এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মহসিন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব), এটুআই এবং বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের সাবেক ডিন বিশিষ্ট কম্পিউটার বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ।
সভাপতিত্ব করবেন নেকটার বগুড়ার পরিচালক শাফিউল ইসলাম (উপসচিব)।
নেকটার সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান বিশ্বের বহুল আলোচিত বিষয়ের মধ্যে ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব’ অন্যতম একটি বিষয়। ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব’ হলো আধুনিক স্মার্ট প্রযু্িক্ত ব্যবহার করে প্রচলিত উৎপাদন এবং শিল্প ব্যবহার স্বয়ংক্রিয়করণের একটি চলমান প্রক্রিয়া।
তথ্যপ্রযুক্তির বাধাহীন ব্যবহার ও দ্রুত তথ্য স্থানান্তরের মাধ্যমে গোটা বিশ্বের জীবন প্রবাহের গতি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইন্টারনেট অব থিংকস এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার মানবসম্পদের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে। এই ডিজিটার বিপ্লবের ছোঁয়ায় উৎপাদন ব্যবস্থায় ঘটবে অকল্পনীয় পরিবর্তন। সেখানে উৎপাদনের জন্য মানুষকে যন্ত্র চালাতে হবে না। বরং যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কর্ম উৎপাদন করবে এবং কাজ হবে আরও নিখুঁত। চিকিৎসা, যোগাযোগ, প্রকাশনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে এর প্রভাব হবে অত্যন্ত জোরালো।
সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশে বর্তমানে তরুণের সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি ৭৬ লাখ, যা মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ। দেশে আগামী ৩০ বছরে তরুণ বা উৎপাদনশীল জনগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকবে। বাংলাদেশের জন্য চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল ভোগ করার জন্য এটাই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।
নেকটার বলছে, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে বিপুল পরিমাণ জনগোষ্ঠী চাকরি হারালেও এর বিপরীতে তৈরি হবে নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র। সে লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে নেকটার বগুড়া জনসাধারনের মাঝে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের গুরুত্ব তুলে ধরার জন্য প্রথমবারের মতো এ রোবটিকস অলিম্পিয়াডের আয়োজন করেছে।
নেকটার বগুড়ার পরিচালক শাফিউল ইসলাম (উপসচিব) জানান, জনগণের মাঝে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের গুরুত্ব তুলে ধরা এবং নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করার জন্যই মূলত এই আয়োজন।