রাজশাহীর চারঘাটে মানসুর রহমান (৭০) নামে এক বৃদ্ধকে গলা কেটে হত্যার দায়ে প্রধান আসামি রোমান হোসেন সেতুকে (২৩) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালত। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার এ রায় ঘোষণা করেন। এসময় প্রধান আসামি রোমান হোসেন সেতু আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
রায় ঘোষণার পর তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেয় কোর্ট পুলিশ। তিনি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের মোফাজ্জেল হোসেন মোফার ছেলে। আর বেকসুর খালাসপ্রাপ্ত আসামি ইবনে আকাওয়াদ শাওন (৩০) একই গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে।
রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু জানান, ২০২০ সালরে ১৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে রাজশাহীর চারঘাট থানার শলুয়া ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ মানসুর রহমানকে নিজ বাড়িতে গলা কেটে হত্যা করা হয়। ওই রাতে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরে দ্রুতই চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করে রাজশাহী জেলা পুলিশ।
মানসুর রহমানকে খুনের ঘটনার পরপরই সন্দেহভাজন এ দুজনকে গ্রেফতার করে চারঘাট থানা পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেফতার এ দুজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তারা জানান, মূলত অর্থের লোভেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। তারা জানতেন যে, বৃদ্ধ মানসুর রহমান তার নিজ বাড়িতে একাই থাকেন। সেতু ও শাওন এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তার বাড়িতে চুরির পরিকল্পনা করেন। তবে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে চুরি করতে গেলে টের পেয়ে যান মানসুর রহমান। এসময় অ্যান্টি কার্টার দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয় বৃদ্ধ মানসুর রহমানকে। এরপর তার রক্তাক্ত মরদেহ ফেলে পালিয়ে যান দুজন।
অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু বলেন, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর তাদের অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে চারঘাট থানা পুলিশ। এরপর আদালতে বিচার কাজ শুরু হয়। পরে এ মামলায় মোট ২৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে উভয়পক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয়। এরপর বৃহস্পতিবার আদালত রায় ঘোষণা করেন।