27 C
Dhaka,BD
May 28, 2023
Uttorbongo
রংপুর

হোটেলে কমেছে ডিম বিক্রি, এক পিস ২৫

নিত্যপণ্যের বাজার যখন ঊর্ধ্বমুখী তখন লাফ দিয়ে বেড়েছে ডিমের দাম। দেশের বাজারে ডিমের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা। হোটেলে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। এতে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ভোক্তারা। ফলে বিক্রি কমেছে দোকানদারদের।

শুধু হোটেলে নয়, খামারেও কমে গেছে ডিম বিক্রি। খামারিরা বলছেন, পোলট্রি খাদ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে ডিমের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সাধারণ ক্রেতারা ডিম কেনা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

নগরীর মুলাটোল আমতলা বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী আহাম্মদ আলী জাগো নিউজকে জানান, আগে প্রতিদিন তার হোটেলে ৩০-৪০ পিস ডিম বিক্রি হতো। এখন ১০ পিসও ডিম বিক্রি করতে পারেন না। দাম বাড়ার কারণে প্রতিটি ডিম ২৫ টাকায় বিক্রি করছেন।

থানা মোড়ের গোলাপী হোটেলের মালিক সাজু মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, আগে তার হোটেলে প্রতিদিন ৯০ থেকে ১২০ পিস ডিম বিক্রি হতো। দাম বৃদ্ধির কারণে তিনি ডিম বিক্রি বন্ধ করেছেন। কেবল ভাজি করার জন্য কয়েক পিস রেখেছেন। তাও প্রতিটি ২৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি হালি ডিম পাইকারিভাবে ৪১ থেকে ৪২ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ৪৪-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা দুদিন আগেও খুচরা বাজারে ৪৮-৫০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছিল।

সিটি বাজারের পাইকারি ডিম বিক্রেতা জাদু মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, দাম বৃদ্ধির কারণে বিক্রি কমেছে। আগে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার পিস ডিম বিক্রি হলেও এখন ৩ থেকে ৪ হাজার পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে। এতে দোকান ভাড়াসহ আনুষাঙ্গিক ব্যয় মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে আয় ব্যয়ের হিসাব মেলাতে পারছেন না সাধারণ মানুষজন। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো।

প্রতিদিন খাবারের তালিকায় সহজলভ্য হিসেবে থাকা পোলট্রি মুরগির ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় নাভিশ্বাস উঠেছে তাদের।

নগরীর সেনপাড়ার বাসিন্দা রাজু আহমেদ জানান, প্রতিমাসে তার পরিবারের জন্য ১০০ থেকে ১২০ পিস ডিম লাগতো। এখন দাম বাড়ার কারণে তিনি ডিম কেনা বন্ধ রেখেছেন।

একটি বেসরকারি কোম্পানির মার্কেটিং অফিসার আহসান হাবীব জাগো নিউজকে বলেন, চাকরি করতে গিয়ে তাকে প্রায়ই হোটেলে খেতে হয়। খরচ সাশ্রয়ী হতে গিয়ে তাকে ডিম ও শাকসবজির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় আগে তিন বেলা হোটেলে খেতে ১ থেকে দেড়শো টাকা লাখতো। এখন সেটা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। সাধারণভাবে ডিম দিয়ে একবেলা ভাত খেতে গেলেও ৬৫-৭০ টাকা খরচ হচ্ছে।

রংপুর সিটি বাজারের খান ট্রেডার্সের মালিক জাহাঙ্গীর আলম খান জাগো নিউজকে জানান, পোলট্রি মুরগির খাবারের অন্যতম উপাদান ভুট্টা প্রতিকেজি সর্বোচ্চ ১৮ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হতো। এখন সেটা দাম বেড়ে ৩৫-৩৬ টাকা হয়েছে। এছাড়া সয়াবিন খৈল ছিল ৩২-৩৩ টাকা। এখন সেটা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি।

তিনি আরও বলেন, প্রতি ১০০ কেজি খাবারের মধ্যে ৬০ কেজি সয়াবিন খৈল এবং ২০ কেজি ভুট্টা থাকে। এতে প্রতিটি ডিম উৎপাদনে এখন খরচ হচ্ছে ৯ থেকে সাড়ে ৯ টাকা। যা আগে খরচ হতো ৬ থেকে সাড়ে ৬ টাকা। ডিমের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোক্তারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

জাহাঙ্গীর আলম খান আরও বলেন, এতে খামারিরা খামার বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশীয় এ শিল্প পুরোপুরি হুমকির মুখে পড়বে।

Related posts

ধরলা নদীতে গোসলে নেমে স্কুলছাত্র নিখোঁজ

Asha Mony

ঈদে বুড়িমারী স্থলবন্দরে সাতদিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

Asha Mony

বাবার সঙ্গে পুকুরে গোসলে নেমে শিশুর মৃত্যু

Asha Mony