36 C
Dhaka,BD
June 6, 2023
Uttorbongo
দেশজুড়ে বগুড়া রাজশাহী

বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে হার্টের ব্লক অপসারণ কার্যক্রম শুরু

বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে হার্টের ব্লক অপসারণ (এনজিওপ্লাস্টি ও স্টেন্টিং) কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মীর জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক রোববার (৩১ জুলাই) শজিমেক হাসপাতালে তিনজন রোগীর স্টেন্টিং (রিং পরানো) ও আটজন রোগীর এনজিওগ্রাম সফলভাবে সম্পন্ন করেন।

আগামী তিন মাসের মধ্যে বগুড়ার এই হাসপাতালের চিকিৎসকরা অত্যাধুনিক এ চিকিৎসায় সার্বিক সক্ষমতা অর্জন করবেন বলে জানান ঢাকার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। এতে বগুড়াসহ উত্তরের ১২ জেলার মানুষের হৃদরোগ চিকিৎসা জটিলতার নিরসন হতে চলেছে।

শজিমেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে ক্যাথলাব স্থাপন করা হয়। ২০০৭ সালে এনজিওগ্রাম শুরুর পরই তা বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ২০১৬ সাল থেকে আবার এনজিওগ্রাম শুরু হলেও সেটির ধারাবাহিকতা ছিল না। এরই মধ্যে এনজিওগ্রাম মেশিনটি অকার্যকর হয়ে পড়ে।

পুরোনো মেশিনের বেহাল অবস্থার কারণে ২০১৯ সালে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন সিমার্জু মেশিন স্থাপন করা হয়। কিন্তু এর কিছুদিন পরই করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে এনজিওগ্রাম কার্যক্রম গতিহীন হয়ে পড়ে। ২০২১ সালের মার্চ থেকে পুরোদমে আবারও এনজিওগ্রাম শুরু হয়। তবে এই হাসপাতালে রিং পরানোর ব্যবস্থা ছিল না। রোগীরা এখানে এনজিওগ্রাম করলেও তাদের রিং পরানোর জন্য ঢাকায় যেতে হতো। এ কারণে ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর থেকে হাসপাতালটিতে স্বল্প খরচে রিং পরানো কার্যক্রম শুরু হয়।

এ কার্যক্রমে সহযোগিতা করে ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট। এখানকার চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান ও নার্সদের সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে পারদর্শী করে তুলতে প্রতি মাসে একটি বিশেষজ্ঞ দল বগুড়ায় এসে চিকিৎসক ও সহযোগীদের নিয়ে এই কার্যক্রম চালু করেন।

বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে হার্টের ব্লক অপসারণ কার্যক্রম শুরু

শজিমেক হাসপাতালে কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান ডা. শেখ শহীদুল হক জানান, গত বছরের ডিসেম্বরের পর থেকেই প্রতি মাসে এখানে রিং পরানো কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় রোববার ঢাকার বিশেষজ্ঞ দলের সহযোগিতায় তিনজন রোগীর স্টেন্টিং ও আটজন রোগীর এনজিওগ্রাম সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়। ঢাকার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলে ছিলেন ইউনাইটেড হাসপাতালের ডা. কায়সার নাসিরুল্লাহ খান, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডা. মহসীন আহমেদ সোহেলসহ ডা. আনিসুর রহমান, ডা. রতন ও ডা. রুমি।

বিভাগীয় প্রধান আরও জানান, এতদিন এই হাসপাতালের চিকিৎসক ও সহযোগীদের এনজিওপ্লাস্টি ও স্টেন্টিং কার্যক্রম ছিল প্রাথমিক পর্যায়ে। এখন তা রপ্ত হওয়ায় মাসে দুদিন রিং পরানো এবং সপ্তাহে দুদিন এনজিওগ্রাম কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। বগুড়ায় এনজিওগ্রাম শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত সবমিলিয়ে প্রায় এক হাজার রোগীর এনজিওগ্রাম করা হয়েছে।

শজিমেক হাসপাতালের অধ্যক্ষ প্রফেসর রেজাউল আলম জুয়েল জানান, একসময় দিনাজপুর হার্ট ফাউন্ডেশন ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনজিওগ্রাম হতো, কিন্তু সেটাও অনেকদিন বন্ধ রয়েছে। এ অঞ্চলে শুধু রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এটি চালু। এ কারণে এ অঞ্চলের গরিব ও সাধারণ মানুষকে অনেক টাকা ব্যয়ে ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা নিতে হতো। এখন থেকে তাদের আর সেই সমস্যা থাকবে না। বিশেষ করে রংপুর বিভাগের জেলাসহ বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ ও সিরাজগঞ্জসহ ১২ জেলার মানুষ স্বল্প খরচে শজিমেক হাসপাতালে এই চিকিৎসা নিতে পারবেন।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের অন্যতম সদস্য ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডা. মহসীন আহমেদ সোহেল বলেন, এখন থেকে যেহেতু নিয়মিত এই হাসপাতালে এনজিওগ্রামসহ রিং পরানো কার্যক্রম চলবে, সে কারণে আগামী তিন মাসের মধ্যে তাদের আর এখানে এসে কোনো সহযোগিতা করার প্রয়োজন হবে না। এর মধ্যেই বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগ সব সক্ষমতা অর্জন করবে। এতে এই অঞ্চলের হৃদরোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা সহজলভ্য হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৪০ জন হৃদরোগী ভর্তি হন। এখানে মোট শয্যা সংখ্যা ৪৪টি হলেও গড়ে এখানে ১৫০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। শয্যা না পেয়ে মেঝেতে রোগীকে অবস্থান করতে হয়। হার্ট ব্লকের চিকিৎসার জন্য যে ওষুধপত্র প্রয়োজন তার অনেকটাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেয় বলে অনেকে রোগীই প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি হন না।

Related posts

পানি মিশিয়ে পেট্রল বিক্রি, পাম্প মালিককে জরিমানা

Asha Mony

স্বচ্ছলের ঘরে আসহায়ের ১০ টাকা কেজির চাল

admin

সড়ক উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত ট্রাকচাপায় সাংবাদিক নিহত

Asha Mony