৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দায়ী করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
পোর্ট অব লস এঞ্জেলসে শুক্রবার (১০ জুন) প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরবরাহের সমস্যা নিরসনে প্রশাসনের চেষ্টার কথা তুলে ধরেন। তিনি এ সময় বিশ্বব্যাপী শিপিং কোম্পানিগুলোর মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে কোভিড মহামারির সময় থেকে দ্রুত মূল্যবৃদ্ধির অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান। খবর আরটির।
বাইডেন তার বক্তব্যে এমন পরিস্থিতির জন্য পুতিনকেই দায়ী করেন।তিনি বলেন, আজকের মূল্যস্ফীতি আমেরিকানরা যা ইতোমধ্যে জানে সে কারণেই হয়েছে। পুতিনের মূল্যবৃদ্ধি আমেরিকাকে কঠোর আঘাত করছে। তিনি এ সময় আমেরিকার চাকরির বাজার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই সবচেয়ে শক্তিশালী বলেও উল্লেখ করেন। পুতিনকে আরেকবার দায়ী করে বাইডেন আরও বলেন, আমরা এর আগে কোনোদিন পুতিন যেভাবে গ্যাস ও খাদ্যের ওপর ট্যাক্স বসিয়েছেন তা দেখিনি।
মার্কিন গণমাধ্যম এবিসির একটি জরিপে দেখা গেছে আমেরিকান জনগণ এখন মূল্যস্ফীতিকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এটিকে তারা এককভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হিসেবে দেখছেন।
সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্য, জ্বালানি থেকে শুরু করে সবকিছুর দামই এখন আকাশছোঁয়া। ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিস্টিকস বলছে, গত মে মাসে মার্কিন ভোক্তা মূল্যসূচক এক লাফে ৮ দশমিক ৬ শতাংশে স্পর্শ করেছে। গত বছরের মে মাসের তুলনায় চলতি বছরের মে মাসে দেশটিতে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ।
আগে যে খরচে সংসার চলত, তার চেয়ে অনেক বেশি খরচ করতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত পরিবারগুলোকে। মুদ্রাস্ফীতির কারণে অনেক পরিবারকেই মাস চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে মার্চ মাস থেকে সুদের হার বাড়ায় মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের জেরে খাদ্য ও জ্বালানি সংকটের কারণে বাড়তি দাম অর্থনীতিকে স্থির হতে দিচ্ছে না বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
ভোগ্যপণ্যের পাশাপাশি ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে চিকিৎসা, জ্বালানিসহ বিমান ভাড়া দ্রুতগতিতে বেড়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিস্টিকস। গত বছরের তুলনায় জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ৩৪ শতাংশ।
অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান, করোনাভাইরাসের জেরে লকডাউনসহ নানা কারণে বিশ্বজুড়ে সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটায় অনেক দেশে মন্দার ঝুঁকি বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলো কোনোভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষম হলেও দরিদ্র দেশগুলোর জন্য মন্দা এড়ানো কঠিন হবে শঙ্কা তাদের।