একজন ফরোয়ার্ড হয়েও ২০২০-২১ মৌসুমে ২১ ম্যাচ খেলে একবারও প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠাতে পারেননি মতিন। এ মৌসুমে মাত্র চারটি গোল করেছেন তিনি।
নিজেদের সীমানায় বল ধরে একের পর এক প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়কে কাটিয়ে করা মতিন মিয়ার সেই গোলটি মনে হয় সেদিনের, ২০১৭ সালের নয়! ইউটিউবে ‘মতিন মিয়া’ খোঁজ করলেই দর্শনীয় গোলটির ভিডিওর লিংক চলে আসে। সেদিন সাইফ স্পোর্টিংয়ের জার্সিতে দেখা মতিন মিয়ায় বাংলাদেশ স্বপ্নে বুক বেঁধেছিল, আর বুঝি গোলের জন্য হাপিত্যেশ করতে হবে না।
সেই মতিন মিয়া এখনো দেশের সেরা ফরোয়ার্ডদের একজন। কিন্তু জাতীয় দলের গোলখরা আর দূর হয়নি।
ক্লাব ফুটবলের দলবদলে এখনো কাঙ্ক্ষিত সিলেটের এই তরুণ। সেটি মতিনের গোল করার সামর্থ্যের কারণেই। যেমন অবিশ্বাস্য সেই গোলটির পরের মৌসুমেই তাঁকে নিজেদের তাঁবুতে নিয়ে নিয়েছে দেশের ফুটবল জায়ান্ট বসুন্ধরা কিংস। নতুন ক্লাবে শুরুটাও দারুণ করেছিলেন মতিন। কিংসের দুই বিদেশি ড্যানিয়েল কলিনদ্রেস ও মার্কোস ভিনিসিয়ুসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ১৫ গোল করেছেন কোনো স্থানীয় ফুটবলার, বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের প্রেক্ষাপটে এই সাফল্য দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানানোর মতো।
কিন্তু সুদিন স্থায়িত্ব পায় না, মতিনের ফর্মেও ছন্দঃপতন ঘটে। এর শুরু চোট দিয়ে, যা তাঁকে ঠেলে দেয় ফর্মহীনতার অন্ধকার কক্ষে। বছর চারেক আগের মতিনকে চেনাই যাচ্ছিল না! একজন ফরোয়ার্ড হয়েও ২০২০-২১ মৌসুমে ২১ ম্যাচ খেলে একবারও প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠাতে পারেননি মতিন। এ মৌসুমে বসুন্ধরা কিংস হ্যাটট্রিক লিগ শিরোপা জিতেছে। কিন্তু মতিন ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। মাত্র চারটি গোল করেছেন তিনি।
মতিন নিজেও এতে বিচলিত, একই সঙ্গে নিজের ওপরই ক্ষুব্ধ, ‘আমার গোল খুবই কম হয়ে গেছে। অন্তত ১০-১২টি গোল করা দরকার ছিল। এ জন্য আফসোস হয়। ’ নিজেকেই প্রশ্ন করেন একদা গোল করে আলোড়ন তোলা মতিন, ‘আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হয়েও কেন আমি গোল করতে পারব না?’
সামনের মৌসুমে বসুন্ধরা কিংসের জার্সিতেই খেলবেন মতিন। হতাশা ভুলে নতুন শুরুর প্রত্যয় শোনালেন তিনি, ‘চোটের কারণে অনেক ম্যাচ খেলতে পারিনি। চোট থেকে ফিট হয়ে মাঠে ফিরেছি, গোলও করেছি। কিন্তু এটা যথেষ্ট নয়। সামনের মৌসুমে সেরাটা দিতে চাই। দলের সাফল্যে আরো অবদান রাখতে চাই। ’ গোলের জন্য মরিয়া বাংলাদেশও মতিনের অবদানের অপেক্ষায়।