রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, রাশিয়ার সামরিক অভিযানের উদ্দেশ্য এখন আর পশ্চিম দোনবাস ও অন্যান্য এলাকায় সীমাবদ্ধ নেই।
বুধবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মার্চ মাসে রাশিয়া ও ইউক্রেনের চলমান দ্বন্দ্ব নিয়ে আপস করার কথা হয়েছিল, কিন্তু সেটা তখনকার ভূগোল সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। তিনি বলেন, এখন পরিস্থিতি ভিন্ন, শুধু ডিএনআর ও এনএলআরে সীমাবদ্ধ নেই। ইউক্রেনের পশ্চিমে রাশিয়া সমর্থিত দোনবাস পিপলস রিপাবলিক ও লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক ডিএনআর ও এনএলআর নামে পরিচিত। খবর আল-জাজিরা।
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোয় যোগদান ঠেকাতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর প্রায় পাঁচ মাস ধরে চলা অভিযানে দেশটির পাঁচ ভাগের এক ভাগ এলাকা দখল করে নিয়েছে রুশ বাহিনী।
চলতি সপ্তাহে অভিযান সাময়িক বিরতি (অপারেশনাল পজ) দেয় পুতিন বাহিনী। এরপর শনিবার (১৭ জুলাই) থেকে আবারও হামলা জোরদার করা হয়েছে। শুরু থেকেই ইউক্রেনকে কোটি কোটি ডলারের অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করে আসছে পশ্চিমা বিশ্ব। সম্প্রতি আরও অত্যাধুনিক অস্ত্র ইউক্রেনীয় বাহিনীর হাতে এসে পৌঁছেছে।
কিয়েভের দাবি, পশ্চিমা দেশগুলোর দেয়া রকেট লঞ্চার ও অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার ৩০টি সেনা ইউনিটের ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। এরপর সোমবার পুতিনের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী প্রতিরক্ষামন্ত্রী সোইগু ইউক্রেনে লড়াইরত রুশ সেনাবাহিনীর ভোস্তক গ্রুপ পরিদর্শন করেন।
এ সময় ভোস্তক বাহিনীর কমান্ডারকে ইউক্রেনের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও আর্টিলারি ব্যবস্থা টার্গেট করে হামলা চালানোর নির্দেশ দেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইউক্রেনীয় বাহিনী ওইসব অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত দোনবাস অঞ্চলের আবাসিক এলাকাগুলোয় হামলা চালাচ্ছে। শুধু তাই নয়, গমক্ষেত ও খাদ্যগুদাম লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে। ফলে ফসল ও খাদ্যশস্য নষ্ট হচ্ছে।
এর আগে ইউক্রেনের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও আর্টিলারি ব্যবস্থা টার্গেট করে হামলার নির্দেশ দিয়েছেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু। সোমবার (১৮ জুলাই) রুশ বাহিনীকে এ নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, এখন তাদের প্রধান কাজ ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলাবারুদ ধ্বংস করা।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। প্রথমদিকে দেশটির রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন শহরে গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে রুশ বাহিনী। তবে মাস দুয়েক পর কিয়েভ থেকে সেনা প্রত্যাহার করে পূর্ব ইউক্রেনের দোনবাস অঞ্চলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে মনোযোগ দেয় রুশ বাহিনী।