পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে এবার ১৪৪ ধারা ভঙ্গের অভিযোগ। সম্প্রতি রাজধানী ইসলামাবাদে সমাবেশকালে কর্মী-সমর্থকরা রাস্তা বন্ধ করে রাখার ঘটনায় ইমরানের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তী জামিন শেষ হলেই তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। আর রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক উপায় অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিপদ পিছু ছাড়ছে না পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের। জনগণের কাছে তুমুল জনপ্রিয় এ নেতা প্রধানমন্ত্রীর পদ হারানোর পর থেকে মামলার ওপরেই আছেন। তাকে কোণঠাসা করতে তার বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আনা হচ্ছে।
খানের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা চলমান রয়েছে। এর মধ্যেই এবার তার বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ আনা হলো। সমাবেশে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের অভিযোগ এনে ইসলামাবাদের একটি থানায় তার বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়।
সম্প্রতি প্রধান বিরোধী দল পিটিআই নেতা শাহবাজ গিলকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে গত শনিবার (২০ আগস্ট) রাজধানী ইসলামাবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন ইমরান খান। ডন জানিয়েছে, গত সোমবার (২২ আগস্ট) এজাহারটি করেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মুহাম্মদ আনোয়ার।
ইমরান বাদেও তার দল পিটিআই-এর শীর্ষ নেতাদের নাম রয়েছে অভিযোগপত্রে। যেমন: পিটিআই নেতা মুরাদ সাঈদ, ফায়সাল জাভেদ খান, শেখ রশিদ আহমেদ, আসাদ উমর, রাজা খুররম নওয়াজ, আলি নওয়াজ আওয়ান, ফায়সাল ভাওদা, শাহজাদ ওয়াসিম ও সাদাকাত আলী আব্বাসির নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ইসলামাবাদে তার সমাবেশে সমর্থকরা অবৈধভাবে রাস্তা বন্ধ করে রাখে। একই সঙ্গে অতিরিক্ত শব্দে মাইক বাজানো হয়।
এদিকে বিচারক ও পুলিশকে হুমকি দেয়ার অভিযোগে করা মামলায় ইমরান খানকে আগামী ৩১ আগস্ট আদালতে উপস্থিত হয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। তা সত্ত্বেও এর আগেই খান গ্রেফতার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মামলার পরই মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন জামিন শেষ হলেই গ্রেফতার করা হবে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী দফতর থেকে অনুমতি মিলেছে বলেও জানান রানা।
এদিকে পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। আর ইস্যুটি গণতান্ত্রিক উপায়ে ও আইনের মধ্যে থেকে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি ইসলামাবাদে জনসভায় পুলিশ প্রধান ও এক মহিলা বিচারপতিকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ প্রধান ইমরান খান। এরপরই তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা হয়। পরে আদালতের দ্বারস্থ হলে তাকে বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) পর্যন্ত জামিন দেয়া হয়।
দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা শাহবাজ গিলকে গ্রেফতার ও এআরওয়াই নিউজের লাইসেন্স বাতিল করায় জনগণকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান ইমরান খান। এর কিছুক্ষণ পরই পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে।
কিন্তু ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে বিপুলসংখ্যক সমর্থক বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেন। বিক্ষোভ মিছিলটি জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে এফ-৯ পার্কে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। সেখানে সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন ইমরান খান।